রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রসাটম একটি পরমাণু বিদ্যুৎ ইউনিটে চতুর্থ প্রজন্মের ফাস্ট নিউট্রন BREST-OD-300 রিয়্যাক্টর স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। পশ্চিম সাইবেরিয়ার সেভরস্কে রসাটমের জ্বালানী কোম্পানি টেভেলের সাইবেরিয়া কেমিক্যাল কম্বাইনে নির্মীয়মান পাইলট ডেমন্সট্রেশন এনার্জী কমপ্লেক্স (PDEC) সাইটে এনপিপিটি নির্মীত হচ্ছে। রসাটমের গণমাধ্যম প্রেরীত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন লেড-কুল্ড ফাস্ট রিয়্যাক্টরটি ‘প্রাকৃতিক নিরাপত্তা’ নীতির ওপর ভিত্তি করে কাজ করবে। রসাটমের কৌশলগত প্রকল্প ‘প্রারিভ’ বা ব্রেকথ্রু’র অধীনে ফাস্ট রিয়্যাক্টর ভিত্তিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিটটি নির্মান করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ইউনিট ছাড়াও এখানে ‘কোজড নিউক্লিয়ার সাইকেল’ ইউনিট বসানো হবে, যেখানে ইউরেনিয়াম-প্লুটোনিয়াম নাইট্রাইড জ্বালানী উৎপন্ন হবে। অধিকন্তু, ব্যবহৃত জ্বালানীর পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য একটি ইউনিটও এখানে স্থাপিত হবে।
BREST-OD-300 রিয়্যাক্টর ইউনিটের প্রধান ডিজাইনার ভাদিম লেমেখভ জানান, “প্রথাগত ভিভিইআর থার্মাল রিয়্যাক্টরের সঙ্গে নতুন এই রিয়্যাক্টরটির কয়েকটি পার্থক্য রয়েছে। এটির রিয়্যাক্টর ভেসেল মেটাল-কংক্রীটের একটি কাঠামো, যেখানে ভিভিইআর এর ক্ষেত্রে পুরো কাঠামোটি ইস্পাতের তৈরি। BREST-OD-300 এর ভেসেল আয়তনে অপেক্ষাকৃত বড় এবং এটির বিভিন্ন অংশ আলাদাভাবে সাইটে এনে সংযোজন করতে হচ্ছে”।
ফাস্ট রিয়্যাক্টরের সুবিধা হলো, এটি জ্বালানী চক্রের সেকেন্ডারি বাইপ্রোডাক্ট বিশেষ করে প্লুটোনিয়ামকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হবে। উচ্চ রিজেনারেশন ফ্যাক্টরের কারণে ফাস্ট রিয়্যাক্টর যতটুকু জ্বালানী ব্যবহার করে তার চেয়ে বেশি সম্ভাব্য জ্বালানী তৈরি করতে সক্ষম এবং একই সঙ্গে অত্যন্ত সক্রিয় ও বিপদজনক একটিনীড (ট্রান্সউরানিক এলিমেন্ট) বার্ন আউট করে। ফাস্ট রিয়্যাক্টরে মেল্ট-ট্র্যাপের মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বড় পরিমানে সাপোর্ট সিস্টেম নির্মানের প্রয়োজন পড়ে না।
রিয়্যাক্টরটি এমন ভাবে ডিজাইন করা যাতে জনসাধারণকে সরিয়ে নেবার প্রয়োজন পড়তে পারে এমন কোনও দুর্ঘটনার কোনও সম্ভাবনাই নেই।
ভবিষ্যতে এজাতীয় বিদ্যুৎ ইউনিটগুলো অধিকতর নিরাপদই শুধু নয়, বরং বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলোর তুলনায় এগুলোর উৎপাদন খরচ প্রতিদ্বন্দিতা মূলকও হবে। BREST-OD-300 রিয়্যাক্টর জ্বালানী হিসেবে মূলত প্লুটোনিয়াম-২৩৯ ব্যবহার করবে। আর এটি ইউরেনিয়াম-২৩৮ থেকে উৎপাদিত হবে।
উল্লেখ্য, প্রকৃতিতে ইউরেনিয়াম-২৩৮ আইসোটোপের প্রচুর মজুদ রয়েছে (৯৯% এর অধিক)। অন্যদিকে, বর্তমানে নিউক্লিয়ার থার্মাল ইউনিটগুলোতে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর প্রাকৃতিক মজুদ প্রায় ০.৭ শতাংশ।