দীর্ঘ অপেক্ষার পর দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা গাজাবাসীর কাছে খাদ্য সহায়তা বহনকারী প্রথম জাহাজটি উপকূলে পৌঁছেছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সময় রাতে সাইপ্রাস থেকে আসা জাহাজটি পৌঁছায়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গাজায় ইসরাইল হামলা চালানোর পর আকাশ এবং সীমান্ত পথে ত্রাণ পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনে সমুদ্র পথে ত্রাণ পাঠানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে গেল মঙ্গলবার সাগরপথে প্রায় ২০০ টন খাবার নিয়ে সাইপ্রাসের লারনাকা বন্দর ছেড়ে গাজার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করেছিল জাহাজ ওপেন আর্মস।
ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রারাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এ খাদ্য সরবরাহ করেছে। এ কাজে সহযোগিতা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। জাহাজে চাল, ময়দা, লেবু, টিনজাত শাকসবজি এবং টিনজাত প্রোটিন পাঠানো হয়েছে। যদিও গাজায় কোনো বন্দর নেই। এজন্য অস্থায়ীভাবে ডব্লিউসিকে দল একটি জেটি বানিয়েছে। যার মাধ্যমে জাহাজ থেকে খাদ্য নামানো হচ্ছে। তবে এসব খাবার কীভাবে বিতরণ করা হবে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
নতুন সামুদ্রিক পথ চালু হলে গাজায় ক্ষুধার্ত মানুষের সংকট কিছুটা কমতে পারে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। যদিও সাহায্য সংস্থাগুলো বলেছে, সমুদ্রপথ ও বিমান থেকে ফেলে এই অঞ্চলের বিশাল চাহিদা মেটানো যথেষ্ট হবে না।
এরমধ্যেই উপত্যকাটিতে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার বাহিনী। শুক্রবার মধ্যাঞ্চল ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়ে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি।
এদিকে হামাসের নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। একইসঙ্গে একে হাস্যকর বলে অভিহিত করেন নেতানিয়াহু। তবে, খুব শিগগিরই যুদ্ধ বিরতিতে দুই পক্ষ পৌঁছাতে পারবে বলে আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্বব্যাপী তীব্র নিন্দা উপেক্ষা করেই শুক্রবার গাজার প্রায় ১২ লাখ ফিলিস্তিনির নিরাপদ আশ্রয়স্থল রাফাহ শহরে স্থল অভিযানের অনুমতি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। তবে, এর বিরোধীতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নেতানিয়াহু রাফাহতে হামলা চালানোর কোনো সুস্পষ্ট এবং কার্যকর পরিকল্পনা দেখেননি বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
একইসঙ্গে অভিযান চালাতে চাইলে ইসরাইলকে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দেখাতে হবে বলেও জানান তিনি। এরমধ্যেই উপত্যকাটিতে অভিযানের পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।