জুবায়ের খান প্রিন্স, পাবনা :
মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে পাবনা জেলার আমিনপুর থানার বিভিন্ন এলাকা। হাত বাড়ালেই মিলছে হেরোইন, ইয়াবা, মদ,গাঁজা সহ বিভিন্ন ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য। মাদক প্রাপ্তির সহজলভ্যতায় এলাকার যুবসম্প্রদায় নিমজ্জিত হচ্ছে নেশার মায়াজালে। মাদক ক্রয়ের অর্থের যোগান দিতে তারা সংঘটিত করছে অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবার, সমাজ ও জাতি। মাদকের বিস্তার বৃদ্ধি ও ব্যবসায়ীদের অবাধ ব্যবসার কারণ হিসেবে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও সহজলভ্য জামিন ব্যবস্থা কে দায়ী করছে এলাকার সচেতন মহল।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আমিনপুর থানার মির্জাপুর এলাকায় মুসা ও বাগমির্জাপুর এলাকায় সুমন রমরমা গাঁজার ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এছাড়াও খাশ আমিনপুর গাংপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আজিজ,রিমেল,সাইফুল ও রাজিব গড়ে তুলেছে ইয়াবা’র জমজমাট ব্যবসা। আমিনপুর বাজার এলাকায় ইয়াবার গডফাদার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে জুয়েল ও খোকন।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমিনপুর থানার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাদক ক্রয়- বিক্রয় হয়ে থাকে জাতসাখিনী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ড কে মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে ইয়াবার ডিলার সোহেল, রাসেল,লাল, আমেনা, আলম,নার্গিস। হেরোইন ব্যবসায়ী শাহিন,রাজ্জাক। গাঁজা ব্যবসায়ী রাজু ও রনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকায় মাদকের অবাধ ব্যবসা করে চলেছে সবুজ।নান্দিয়ারা এলাকায় ইয়াবার ডিলার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে আন্তা ও মোমিন। এছাড়া টাংবাড়ী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আলো কারাগারে থাকায় নতুন ব্যবসা পরিচালনা করছে মামুন। এছাড়া হরিদেবপুর তথা কাশিনাথপুর ফুলবাগান এলাকায় মদ সরবরাহ করেছেন লাল।
রুপপুর ইউনিয়নে মাদকের গডফাদারের ভুমিকায় রয়েছে রনো। পাশাপাশি রুপপুরের গাছপাড়া এলাকার রনি ও পশ্চিমপাড়া এলাকার এরশাদ এখন এলাকার প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী।
মাদকের স্বর্গভূমিখ্যাত আহাম্মাদপুরে সরকারের পতনের পর কিছু ব্যবসায়ী গা ঢাকা দিলেও নতুন করে প্রকাশ্যে এসেছে কিছু মাদক ব্যবসায়ী। আহাম্মাদপুর মধ্যপাড়া গ্রামে ইয়াবার ব্যবসা চালাচ্ছে বাবু ও সবুজ। সোনাতলা এলাকায় প্রভাবের সাথে মাদক সরবরাহ করে আসছে ব্যবসায়ী হৃদয়। এছাড়াও বোয়ালিয়ার সাগর ও বিরামপুর ডাংগীপাড়া এলাকার আমির মাদকের ডিলার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
মাসুমদিয়া ইউনিয়নে নতুন মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত রয়েছে শেখ মেহেদী, টিটু মোল্লা,শান্ত, বাবু, রায়হান সহ অনেকে।
সমগ্র আমিনপুর থানা ব্যাপী মাদকের ভয়াবহতা ব্যাপক আকার ধারণ করলেও অনেকটা নিশ্চুপ ও উদাসীন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তাদের এই নিস্ক্রিয়তার কোন কারণ জানা যায় নি। আমিনপুর থানা এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রণ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিতাড়িত করতে পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খান, পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান বাশীর ও আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আলমগীর হোসেন’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আমিনপুর থানা এলাকার সচেতন ব্যক্তিবর্গ।
আমিনপুর থানা এলাকার অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ী ও এই সকল মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়দাতাদের নিয়ে চলবে ধারাবাহিক প্রতিবেদন।